আমি জেলে যেতে ভয় পাই না। সময় হলেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাব’।
বৃহস্পতিবার সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টি আয়োজিত
এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমি বিরোধীদলে বসার
জন্য নির্বাচন করবো না। আরেকবার ক্ষমতায় যেতে চাই। তবে তা ক্ষমতার মোহে নয়, দেশ উদ্ধারের জন্য। আরেকবার সুযোগ পেলে উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের উপর অন্যায়ের
প্রতিশোধ নিতে চাই।
তিনি বলেন,
আমি মতা ছেড়েছিলাম বলেই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা
অব্যাহত আছে। তাছাড়া আমার মতা গ্রহণের ইচ্ছা ছিলো না। বিচারপতি ছাত্তারের অনুরোধে মতা গ্রহণ করেছিলাম। আমার জনপ্রিয়তার ভয়ে সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, সাহস থাকলে রাষ্ট্রপতি
শাসিত সরকার পদ্ধতি প্রবর্তন করুন। আপনারা তিন দল একজোট
হয়েও আমার বিজয় ঠেকাতে পারবেনা না।
মানুষ এখন মনে করে জাতীয় পার্টি দেশের জন্য, তাদের কিছু করতে পারবে একথা উল্ল্যেখ করে এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি একক রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনে যাবে। তবে পরিস্থিতি বুঝিয়ে দেবে দলকে কোন পথে চলতে হবে। আলোচনা সভায় এরশাদ পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজারসহ সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতার দিক তুলে ধরেন।
ঐতিহাসিক ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের এই দিনে তীব্র আন্দোলনের মুখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মতা
হস্তান্তরে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে এরশাদের নয় বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ
সামরিক আইন জারি করে মতা দখল করেন। ৬ ডিসেম্বর দিনটি জাতীয়
পার্টি ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে এরশাদ বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছিল। তাই আমার দলের পক্ষ থেকে কাউকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। নির্বাচনে যে দল জিতবে, তার জন্যই আমার দোয়া
থাকবে।
এরশাদ বলেন,
আমি ১৯৯০ সালে মতা ছেড়েছি। তখন দেশে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছিল। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হোক, জনগণ অনিরাপদ বোধ করুক, তা আমি চাইনি।
মতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার
ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার
পদ্ধতির প্রয়োজন হবে না। সরকারের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, সরকার সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজে। দেশে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে সেদিক তাদের নজর নেই।
আলোচনা সভায় এরশাদ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
বলেন, ১৯৯০ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঠেকাতেই জাতীয় পার্টি মতা ছেড়ে দিয়েছিল। আর এর মাধ্যমে সংবিধান সংরণ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি এসএম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়
বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম
সদস্য কাজী জাফর আহম্মদ, মহাসচিব এবিএম রুহুল
আমিন হাওলাদার। প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ ছাত্তার, গোলাম হাবিব দুলাল, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এম হান্নান, জিয়াউদ্দিন আহম্মদ বাবলু, করিম উদ্দিন ভরসা, গোলাম কিবরিয়া টিপু, এডভোকেট সালমা ইসলাম, সুনীল শুভরায়,
মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।
পোষ্ট : বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ৭ : ৩৪ মিনিট ০৭ ডিসেম্বর ১২।